দেশের প্রায় সব টেলিফোন গ্রাহকের কথোপকথন, ভয়েস ও ডাটা রেকর্ড করা হচ্ছে। তবে তা সংরক্ষিত থাকছে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। সরকারের নির্দেশে ৬টি মোবাইলফোন অপারেটর, বিটিসিএল ও ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জগুলো বাধ্যতামূলকভাবে সব শ্রেণীর টেলিফোন গ্রাহকের কথোপকথন, এসএমএস ও ডাটা রেকর্ডের এ কাজ করে চলেছে। এসব কাজের জন্য প্রত্যেক মোবাইল ফোন অপারেটরের একটি নির্দিষ্ট বিভাগ দিনরাত ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকছে।

তারা প্রতিনিয়ত সরকারের আইন-শৃংখলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া চাহিদা পূরণ করে চলছে। সরকার থেকে যখন কোন গ্রাহকের নম্বর সম্পর্কে তথ্য ও লোকেশন জানতে চাওয়া হচ্ছে মুহূর্তে সেগুলো তারা সরবরাহ করছে। সার্ভারে রেকর্ড রাখছে। এসব কাজে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো নিজ উদ্যোগে কোটি কোটি টাকার মেশিনপত্র ও সার্ভার সংযোজন করেছে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা সেখানে বিশেষজ্ঞ কর্মকতা-কর্মচারী কাজ করে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, সরকারের প্রয়োজনে রেকর্ডকৃত এসব ডকুমেন্ট থেকে সংশ্লিষ্টদের তথ্য প্রতিনিয়ত যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এসব ডকুমেন্টের সঙ্গে সরকারবিরোধী কোন কর্মকাণ্ড, জঙ্গি সংগঠন ও আন্তর্জাতিক পাচারকারী ও চোরাকারবারির সঙ্গে সম্পর্ক আছে কিনা তা খুঁজে দেখা হচ্ছে। এছাড়া অপহরণ, চাঁদাবাজি ও খুনের পরিকল্পনার সঙ্গে কারও কোন ধরনের সংশ্লিষ্টরা আছে কিনা তাও খুঁজে দেখা হচ্ছে।
অপর দিকে একটি সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরাও কিছু কিছু চিহ্নিত ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর টেলিফোনে আড়ি পাতছে। এ জন্য তাদের নিজস্ব মেশিনপত্র ও সরঞ্জামাদি রয়েছে। জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে এসব টেলিফোনে আড়ি পাতছেন গোয়েন্দারা। এ জন্য একটি গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ে সাময়িকভাবে স্থাপন করা হয়েছে আড়িপাতার যন্ত্রপাতি। সেখানে পুলিশ, এসবি, এনএসআই আলাদা কক্ষে মোবাইল ফোনে আড়ি পাতে। তবে এই আড়িপাতার প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করতে আলাদা একটি দফতর করা হয়েছে।
টেলিফোনে আড়িপাতা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ পৃথক দফতর করা হলেও তা এখনও চালু হয়নি। ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) নামে নতুন এ সংস্থাটি গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে যাত্রা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনও হয়নি। ইতিমধ্যে এ দফতরের পদ সৃষ্টিসহ নিয়োগবিধি প্রণয়ন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বেতন স্কেল যাচাইয়ের ছাড়পত্রও দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে নিয়োগের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। একই সঙ্গে টেলিফোনে আড়িপাতার ক্ষেত্রে নাগরিক অধিকার সুরক্ষায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগে আড়িপাতার এ কাজটি একটি গোয়েন্দা সংস্থার নিয়ন্ত্রণে ছিল।
সরকারের একটি সূত্র জানায়, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কখন কার মোবাইল ফোনে আড়ি পাতছে, তা আগে থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানতে পারছে না। এ কারণে এখন থেকে সব মোবাইল ফোন অপারেটর, টিঅ্যান্ডটি ফোন ও সব ইন্টার কানেকশন এক্সচেঞ্জের (আইসিএক্স) ফোনে আড়িপাতার পুরো নিয়ন্ত্রণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে থাকবে। জানা গেছে, আপাতত এনটিএমসির কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় এখনও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃংখলা বাহিনী এ কার্যক্রম চালাচ্ছে। আড়িপাতার জন্য গোয়েন্দা দফতরে আগে যে কেন্দ্রটি ছিল তার মাধ্যমে এক সঙ্গে ৫ হাজার মোবাইল ফোনে আড়িপাতা যেত। তবে আলাদা দফতর করা হলে তার মাধ্যমে এক সঙ্গে আরও দ্বিগুণ সংখ্যক টেলিফোনে আড়িপাতা সম্ভব হবে।

আড়িপাতা আইনে যা আছে : বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন আইন-২০০১-এ সরকারকে টেলিফোনে আড়িপাতার ক্ষমতা দেয়া আছে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা জনশৃংখলার স্বার্থে এ আইনের ৯৭ক ধারায় এ বিষয়ে বলা হয়েছে, এই আইন বা অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যা কিছুই থাকুক না কেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা জনশৃংখলার স্বার্থে যে কোন টেলিযোগাযোগ সেবা ব্যবহারকারীর পাঠানো বার্তা ও কথোপকথন প্রতিহত, রেকর্ড ধারণ বা তৎসম্পর্কিত তথ্যাদি সংগ্রহের জন্য সরকার সময় সময় নির্ধারিত সময়ের জন্য গোয়েন্দা সংস্থা, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা বা আইন-শৃংখলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত সংস্থার কোন কর্মকর্তাকে ক্ষমতা দিতে পারবে এবং এ কার্যক্রমে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারীকে নির্দেশ দিতে পারবে এবং পরিচালনাকারী ওই নির্দেশ পালন করতে বাধ্য থাকবে।
এ আইনে টেলিফোনে আড়িপাতার দণ্ড সংক্রান্ত ৭১ ধারায় বলা হয়েছে, ব্যক্তি যদি অপর দুজন ব্যক্তির টেলিফোন আলাপে ইচ্ছাকৃতভাবে আড়ি পাতেন তাহলে প্রথমোক্ত ব্যক্তির এই কাজ হবে একটি অপরাধ এবং তার জন্য তিনি অনধিক ৬ মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ২০০৬ সালে এ ধারায় সংশোধনী এনে এর সঙ্গে অপর একটি প্যারা জুড়ে দিয়ে বলা হয়েছে, তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ৯৭ক-এর অধীন সরকার হতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত গোয়েন্দা সংস্থা, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা বা আইন-শৃংখলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত সংস্থার কোন কর্মকর্তার ক্ষেত্রে এই ধারার বিধান প্রযোজ্য হবে না।’ অর্থাৎ সরকার আইন-শৃংখলা বাহিনীর যে সংস্থা বা যে কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেবে সে সংস্থা বা সে ব্যক্তি টেলিফোনে আড়ি পাততে পারবেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আইনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী কারও টেলিফোনে আড়ি পাততে হলে সরকার তথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিতে হবে। এ সংক্রান্ত অনুমতিপত্রে কাকে, কি কারণে এবং কতক্ষণের জন্য আড়িপাতার আওতায় রাখা হবে তা উল্লেখ থাকতে হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত : টেলিফোনে আড়িপাতা সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন বাস্তবায়ন ও এনএমটিসি গঠনের বিষয়ে ২০১০ সালের ৩১ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চারটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অন্যতম সিদ্ধান্তে বলা হয়, বর্তমান আইনের বিধান অনুযায়ী এনএমটিসি বা আড়িপাতার দফতর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে ও সরাসরি তত্ত্বাবধানে এর কার্যক্রম আইন সম্মতভাবে পরিচালিত হবে। কাকে, কতক্ষণ, কি পরিস্থিতিতে ইন্টারসেপ্ট বা আড়িপাতা হবে এবং কাকে করা হবে না তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করবে। এ কাজ আইনানুগভাবে সম্পন্ন করার জন্য সুস্পষ্ট গাইডলাইন প্রস্তুত করা হবে। প্রস্তাবিত সাংগঠনিক কাঠামো সেভাবে সংশোধন করতে হবে।

টেলিফোনে আড়িপাতার বিষয়ে বিভিন্ন মহল থেকে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। শুধু দেশে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও এ নিয়ে নানা গুঞ্জন আছে। ভারতে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার মুঠোফোনে আড়িপাতার ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর দেশটিতে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। যুক্তরাজ্যে খবরের তেলেসমাতি দেখানোর জন্য কতিপয় ব্যক্তির টেলিফোনে আড়িপাতার অভিযোগে বিশ্বের বহুল প্রচারিত ও আলোচিত ট্যাবলয়েড সাপ্তাহিক নিউজ অব ওয়ার্ল্ড বন্ধ হয়ে যায়। এই ঘটনায় ওই পত্রিকার সাবেক সম্পাদক অ্যান্ডি কুলসনকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ।
একই অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুনের সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ভারতে রতন টাটার কথাবার্তায় আড়িপাতা নিয়েও ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছিল। বেশ কিছুদিন আগে একটি গোয়েন্দা সংস্থা বর্তমান সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও সরকারদলীয় কয়েকজন নেতার মুঠোফোনে আড়ি পাতে এবং এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতনদের কাছে পাঠায়। এ নিয়ে তখন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে হৈচৈ পড়ে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে সরকার জানতে পারে, আড়িপাতার বিষয়টি মন্ত্রণালয় জানত না। কীভাবে আড়িপাতা হয়েছে, খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গোয়েন্দা সংস্থা নিজের মতো করেই আড়িপাতার কাজ করছে। এ কারণে এনটিএমসির নিয়ন্ত্রণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে নিয়ে আলাদা পরিদফতর খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সংশি¬ষ্ট গোয়েন্থা কার্যালয়ে স্থাপিত এনটিএমসিতে কর্মরত কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, সেন্টারটি তাদের ভবনে স্থাপিত হলেও এটি ওই গোয়েন্দা সংস্থার নয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে তারা পরিচালনা করছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা সংশি¬ষ্ট অধিদফতর চাইলে এটি যে কোন স্থানে স্থানান্তর বা কার্যক্রম পরিচালনায় যে কোন ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান ব্যবস্থার পাশাপাশি পুলিশও আরেকটি যন্ত্রপাতি স্থাপনের চিন্তাভাবনা করছে। ইতিমধ্যে তারা কিছু যন্ত্রপাতি এনে কার্যক্রমও চালাচ্ছে। সম্প্রতি কেরানীগঞ্জের শিশু পরাগ অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশ এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে অপহরণকারীদের কথাবার্তা এবং বিভিন্ন সময়ে তাদের লোকেশন জানতে পেরেছে।
দেশের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাংলাদেশের সংবিধানে মৌলিক অধিকার হিসেবে নাগরিকদের বাসগৃহ, চিঠি আদান-প্রদান, কথা বলাসহ যে কোন ধরনের তথ্য বিনিময়ের অধিকার নিশ্চিত করার বিধান আছে। এ বিধানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, চিঠিপত্রসহ যে কোন মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদানের গোপনীয়তার স্বার্থে আইনের মাধ্যমে এ বিষয়ে যুক্তিসঙ্গত বিধিনিষেধ/নিয়ন্ত্রণ করার আরোপ করতে পারে। তারা বলেছেন, উন্নত দেশে টেলিফোনে আড়িপাতার বিষয়ে নিয়ন্ত্রণমূলক কাঠামো রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে একটি বিশেষ আদালতের অনুমতি ব্যতীত আড়িপাতা আইনত নিষিদ্ধ। এ ছাড়া রয়েছে সিনেটরদের নিয়ে গঠিত সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটি। বাংলাদেশে এ ধরনের কোন নিয়ন্ত্রণমূলক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নেই। নতুন যে কাঠামো তৈরি হয়েছে সেটির কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি।

বিশেষজ্ঞদের মতামত : নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশে¬ষক বলেন, টেলিফোনে আড়িপাতার গোপনীয় কাজটি দাফতরিক অবয়বে আরও যুগোপযোগী ও স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠুক। পাশাপাশি টেলিফোনে আড়িপাতার বিষয়ে জনগণের অধিকার সুরক্ষায় যে আইন রয়েছে তা যাতে যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। তিনি মনে করেন, চিহ্নিত অপরাধী ও অপরাধ দমনের স্বার্থে সংশি¬ষ্ট ব্যক্তিদের টেলিফোনে আড়িপাতা হলে তা ঠিকই আছে। কিন্তু এর বাইরে যাদের নিয়ে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার আশংকা নেই এবং যারা সন্ত্রাসী বা ওই ধরনের অপরাধের আওতায় কোনভাবেই পড়েন না বা পড়ার কোন আশংকা নেই, তাদের টেলিফানে আড়িপাতা হলে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। সংবিধান এ অধিকার কাউকে দেয়নি। উন্নত দেশ হলে এ ধরনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গের দায়ে ভুক্তভোগী ব্যক্তি আদালত পর্যন্ত চলে যাবেন।
সাবেক একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জানান, টেলিফোনে আড়িপাতার কাজে এখনও যে অফিস এবং জনবলের সেটআপ নেই তা কিন্তু নয়। একটি সুনির্দিষ্ট স্থানে, সুনির্দিষ্ট নিয়মে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তবে একেবারে স্বতন্ত্র ও নিজস্ব একটি দফতর এবং সেটআপ হলে আরও ভালো হবে। তিনি বলেন, একথা বলার অবকাশ নেই যে, টেলিফোনে অহেতুক কোন আড়িপাতা নয়। এর কারিগরি কাজে যারা সংশি¬ষ্ট তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার বাইরে কিছুই করতে পারেন না। তিনি মনে করেন, যারা এ দায়িত্বের সঙ্গে সংশি¬ষ্ট তারা এ কাজে জনগণের প্রাইভেসি সুরক্ষার ক্ষেত্রে গ্যারান্টি ক্লজ হিসেবে যথেষ্ট সজাগ এবং সচেতন।
বিদ্যমান কার্যক্রম : সূত্র জানিয়েছে, দেশের নিরাপত্তা ও আইন-শৃংখলা সুরক্ষার প্রশ্নে প্রয়োজন হলে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাব আড়িপাতা প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। এ কাজে প্রত্যেকের জন্য পৃথক ইউনিট রয়েছে। প্রতিটি সংস্থা নিজস্ব প্রয়োজন ও পরিকল্পনা অনুযায়ী এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে। টেলিফোনে আড়িপাতার মাধ্যমে সন্ত্রাস দমন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আইন-শৃংখলা বাহিনীর ব্যাপক সাফল্যও রয়েছে।
Post a Comment