ভারতের ক্রম-বর্ধনশীল ডাটা মার্কেটকে দখল করার জন্য আগামী বছর বেশ কিছু ফোরজি অপারেটর নাম মাত্র মূল্যে উচ্চ-গতির ইন্টারনেট সেবা প্রদান করবে। এর ফলে দেশটিতে মূল্য যুদ্ধ শুরু হতে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। বিশেষ করে মুম্বাই ভিত্তিক তিকোনা ডিজিটাল গুজরাট, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ এবং হিমাচল প্রদেশে ফোরজি সেবা মেগাবাইট প্রতি ২ থেকে ৫ পয়সা নেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

এই মূল্য বাজারে আলোড়ন সৃষ্টি করতে সক্ষম বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী প্রকাশ বাজপেয়ী। প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে ওয়াইফাই এর উপর ভিত্তি করে ব্রডব্যান্ড সেবা প্রদান করছে বলেই এই বিশেষ মূল্যে গ্রাহকদের কাছে ফোরজি সেবা পৌঁছে দিতে সক্ষম হচ্ছে।
এদিকে হরিয়ানা, মধ্য প্রদেশ- ছত্তিসগড়, গুজরাত, ইউপি, বিহার এবং ঝাড়খণ্ড অঞ্চলের তরঙ্গ জয়ী ভিডিওকন এই তরঙ্গ ব্যবহার করে ফোরজি সেবা চালু করবে এবং মূল্য ২ জি এবং ৩জি ডাটা ট্যারিফ অপেক্ষা কম রাখবে।
ভারতে একমাত্র ফোরজি সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান ভারতী এয়ারটেল বর্তমানে মেগাবাইট প্রতি মূল্য ১৩-১৫ পয়সা হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি অবশ্য ডোঙ্গল বা ডাটা কার্ডের জন্য ৪,৯৯৯ রুপি গ্রহণ করে থাকে। ভারতী এয়ারটেলের মূল্য অবশ্য তিকোনা ডিজিটাল এর মূল্য অপেক্ষা এবং প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব টুজি ডাটা মূল্য (মেগাবাইট প্রতি ৯-১০ পয়সা) অপেক্ষা বেশি তবে ৩জি মূল্য অপেক্ষা কম (মেগাবাইট প্রতি ৩০-৩৫ পয়সা)।
থ্রিজি বিনিয়োগ থেকে তেমন রাজস্ব এবং ভয়েস রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ কমে যাওয়ায় উচ্চ গতির ডাটা সেবা ভারতের মোবাইল অপারেটরদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। সস্তা ফোরজি মূল্য থ্রি জি অপারেটরদের জন্য ব্যবসা অসম্ভব ব্যাপার হিসেবে দেখা দিতে পারে। বর্তমানে বেশির ভাগ থ্রিজি অপারেটর মেগাবাইট প্রতি মূল্য ৩০ পয়সা হিসেবে গ্রহণ করে থাকে।
জাতীয় ভাবে ফোরজি সেবা প্রদান করার লাইসেন্স শুধুমাত্র রিলায়েন্স ইন্ড্রাস্ট্রিজ গ্রহণ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তার মূল্য পরিকল্পনার ব্যাপারে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে আসছে। তবে বেশির ভাগ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিষ্ঠানটির ডাটা সেবার মূল্য আরো কম হবে।
তবে মূল্য অপেক্ষা হ্যান্ডসেটের অভাব ভারতের জন্য এক বড় বাঁধা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই মুহূর্তে ভারতে পাওয়া যায় এমন ফোরজি হ্যান্ডসেটের সংখ্যা মাত্র একটি। চিপ নির্মাতা কোয়ালকম আরো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের ফোরজি হ্যান্ডসেট যেন ভারতের বাজারে পাওয়া যায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তবে এই হ্যান্ডসেটগুলোর মূল্য অধিক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে হ্যান্ডসেট সমস্যা সমাধান করার জন্য মাইফাই ডিভাইস ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিলায়েন্স। এর ফলে গ্রাহকেরা তাদের হ্যান্ডসেট পরিবর্তন না করেও ফোরজি সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।
ভারতের টেলিযোগাযোগ নীতি অনুযায়ী বর্তমানে ফোরজি অপারেটরেরা ভয়েস সুবিধা দেয়ার অধিকার রাখেনা। তবে ২০১৩ সালে যে নতুন নীতি চালু হতে যাচ্ছে তাতে ইউনিফায়েড লাইসেন্স গ্রহণের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ সেবা দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো যে কোন সেবা প্রদান করতে সক্ষম হবে।
Post a Comment