আশা করি আপনার সবাই ভালো আছেন। সবার জন্য রইলো সালাম ও শুভেচ্ছা।
কখনো কি লক্ষ্য করেছেন যে আপনার LCD মনিটরের কোন পিক্সেল সব সময় যে কোন একটি রঙের হয়ে থাকে? যদি আপনার মনিটরে এমন কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে জেনে রাখুন আপনি “আটকে যাওয়া পিক্সেল” সমস্যায় ভুগছেন যাকে ইংরেজীতে stuck pixel বলা হয়। খুশির কথা এই যে, আটকে যাওয়া পিক্সেল সমস্যা অনেক ক্ষেত্রে সমাধান করা সম্ভব।
আটকে যাওয়া বা মৃত পিক্সেল সমস্যা একটা হার্ডওয়্যারজনিত সমস্যা যা ম্যানুফ্যাকচার ত্রুটির জন্য হয়ে থাকে। মনিটরের পিক্সেলগুলো এভাবে আটকে বা মরে যাওয়ার কথা না।
আটকে যাওয়া পিক্সেল বনাম মৃত পিক্সেল
আটকে যাওয়া পিক্সেলগুলো মৃত পিক্সেল থেকে আলাদা। আটকে যাওয়া পিক্সেল সবসময় একটি রঙে প্রদর্শন করে। সেটা হতে পারে লাল, সবুজ বা নীল। অপরদিকে, মৃত পিক্সেলগুলো কালো রঙের দেখায়।
প্রায়শই, আটকে যাওয়া পিক্সেলকে মুক্ত করা সম্ভব, কিন্তু মৃত পিক্সেলকে কর্মক্ষম করা সম্ভব নাও হতে পারে।
আটকে যাওয়া পিক্সেল সনাক্তকরন
আপনার মনিটরে কি মৃত পিক্সেল আছে? এর উত্তর দেয়া কঠিন হতে পারে। তবে, মনিটরকে যে কোন এক রঙে রুপান্তরিত করে তা সনাক্ত করা যেতে পারে (যে কোন এক রঙের ওয়ালপেপার ব্যবহার করা যেতে পারে)। অথবা মৃত পিক্সেল পরীক্ষা করার ওয়েবসাইটে গিয়েও তা করা যেতে পারে। লিঙ্কটি ব্রাউজারে খোলার পর F11 ক্লিক করে পেজটাকে ফুল স্ক্রীন করে নিন। তারপর পেজ এর মধ্যে পরীক্ষা করার জন্য যেসব লিঙ্কগুলো দেয়া আছে সেগুলো একটা একটা করে ক্লিক করুন, ইনশাল্লাহ যদি সমস্যা থাকে তাহলে আপনি তা বের করতে পারবেন। ও, ভালো কথা; আগে ভালো করে মনিটরটা পরিষ্কার করে নিয়েন। অনেক সময় ময়লাকেও মনে হতে পারে মৃত পিক্সেল।
আটকে যাওয়া পিক্সেল ঠিক করা:
পরীক্ষা করার পর দেখতে পেলেন আপনার মনিটরে “এক রঙে আটকে যাওয়া” পিক্সেল আছে – এখন কি করবেন? কয়েকটা উপায়ে এ সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে কিন্তু নির্দিষ্ট কোন সমাধান নেই। নিচে যে পদ্ধতি গুলো বলবো তাতে সমস্যার সমাধান হতে পারে কিন্তু কোন গ্যারান্টি নেই:
- অপেক্ষা: কিছু কিছু আটকে যাওয়া পিক্সেল এমনিতেই কিছু সময় পরে ঠিক হয়ে যেতে পারে। সেই সময়টা হয়তো ঘন্টা, দিন, সপ্তাহ এমনকি বছরও হতে পারে।
- সফটওয়্যার: জানি পিক্সেলের এই সমস্যাটা হার্ডওয়্যারজনিত। কিন্তু এমন কিছু সফটওয়্যার আছে যেগুলো স্ক্রীনের বিভিন্ন রঙকে খুব দ্রুততার সাথে পরিবর্তন করতে পারে।। যার ফলে আটকে যাওয়া পিক্সেলটি তার রঙ পরিবর্তন করতে পারে। পরিচিত অনেকেই বলেছে এই পদ্ধতিতে তাদের আটকে যাওয়া পিক্সেলের সমস্যা দূর হয়েছে।
UndeadPixel নামের সফটওয়্যারটি একাজে আপনার সহায়ক হতে পারে। এর মধ্যে বিল্টইন আটকে যাওয়া পিক্সেল সনাক্তকরন সিস্টেম আছে। এর প্রধান টুল একটি ছোট্ট ডট আছে। এই ডট টিকে আপনি আটকে যাওয়া বা মৃত পিক্সেলের উপর ড্র্যাগ করে নিয়ে যান এবং সফটওয়্যারটিকে অন্তত কয়েক ঘন্টা তার কাজ করতে দিন। ইনশাল্লাহ ভাগ্য সহায়ক হলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
- মৃত বা আটকে যাওয়া পিক্সেলকে বাস্তবিকভাবে হাতের আঙুল দিয়ে চাপ দেয়া: অনেকেই বলেছে যে তাদের মনিটরের মৃত বা আটকে যাওয়া পিক্সেলের উপর আঙুল দিয়ে চেপে ধরে বা একটু ঘষা দেয়ার পর তা ঠিক হয়ে গেছে। যদি আপনি এভাবে চেষ্টা করতে চান তাহলে একদম নরম একটা কাপড়ের টুকরো দিয়ে পিক্সেলের উপর চাপ দিন বা একটু ঘষে দেখুন। খুব জোরে চাপ/ঘষা দিবেন না কারন এতে আপনার মনিটরের ক্ষতি হতে পারে।
মনিটরের ওয়ারেন্টি:
দুঃখজনক হলেও সত্যি, একটা মৃত/আটকে যাওয়ার জন্য কোম্পানি আপনাকে ওয়ারেন্টির অধীনে সার্ভিস নাও দিতে পারে। এমনকি যদি খুব সম্প্রতি মনিটর কিনে থাকেন, তাও না। বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারার কোম্পানির এক্ষেত্রে বিভিন্ন নীতি আছে। অনেকে আছে একটা মৃত/আটকে যাওয়া পিক্সেলের জন্য পুরো মনিটরটাই পাল্টে দেয়। অপর দিকে অনেকে আছে যারা একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ মৃত/আটকে যাওয়া পিক্সেলের পরেই আপনাকে ওয়ারেন্টির অধীন রিপ্লেস/সার্ভিস দেবে। হয়তো আপনার মনিটর রিপ্লেস/সার্ভিস করার জন্য অন্তত ৫ টা মৃত/আটকে যাওয়া পিক্সেল থাকতে হবে। বিস্তারিত জানার জন্য আপনি আপনার মনিটরের/ল্যাপটপের ওয়ারেন্টি বিষয়ক ম্যানুয়াল দেখতে পারেন অথবা সরাসরি ম্যানুফ্যাকচারার কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
যদি কেই পোষ্টটি দ্বারা উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলেই নিজের করা পোষ্টটিকে সার্থক মনে করবো। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
Post a Comment