থ্রি জি’র (তৃতীয় প্রজন্মের) নিলামে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক ঠিক করাসহ বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে দেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। খুব কড়া গলায় তারা বলছেন, এদেশের রেগুলেটরির অবস্থা খুবই খারাপ। এই অবস্থার উন্নতি না হলে তাদের পক্ষে থ্রি জি’র নিলামে অংশ নেওয়া নেহাতই সমস্যার।

রোববার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, টেলিযোগাযোগ সচিব মোঃ আবুবকর সিদ্দিক এবং বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোসের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করে তাদের এমন অবস্থানের কথা জানিয়েছে গ্রামীণফোন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন, গ্রামীণফোন বোর্ডের চেয়ারম্যান সিগভে ব্রেককি।
সাংবাদিদকদের তিনি বলেন, সম্প্রতি "গ্রামীণ ব্যাংক কমিশন" যে রিপোর্ট দিয়েছে তা তাদের সন্দেহকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারা বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তা গ্রস্থ। পুরো রিপোর্ট তারা পড়েছেন। এবং সে কারণেই তাদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
সিগভে বলেন, কমিশন পরিস্কার করে সরকারকে লিখেছে গ্রামীণফোনের লাইসেন্স বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যে। তবে কমিশনের এই রিপোর্টকে প্রাথমিক রিপোর্ট মন্তব্য করেও সিগভে বলেন, চূড়ান্ত রিপোর্টের জন্যে তারা অপেক্ষা করছেন না। বরং এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চান। তিনি বলেন, সরকারকে আমরা বলেছি, এটি ঠিক না হলে তারা থ্রি জি’তে যাবেন না।
একই সঙ্গে সিগভে বলেন, স্পেকট্রামের ভ্যাট সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়টি আদালতে রয়েছে। একইভাবে অডিট সংক্রান্ত রজিমানার বিষয়টিও এখন আদালতে। দুটো বিষয়ে আদালতের বাইরে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে চায় গ্রামীণফোন। একইভাবে থ্রি জি নীতিমালার কয়েকটি বিষয়েও তাদের শর্ত আছে। এগুলোর সমাধান হলেই কেবল থ্রি জি’র জন্যে মাঠে নামবে গ্রামীণফোন।
সিগভে ব্রেক্কি একই সঙ্গে গ্রামীণফোনের মূল কোম্পানি টেলিনরের ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং টেলিনর এশিয়ার প্রধান। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি ঢাকায় এসে তিনি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতসহ সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তখনও তিনি থ্রি জিতে না যাওয়ার ক্ষেত্রে গ্রামীণফোনের অনাগ্রহের কথা জানান।
সিগভে বলেন, বাংলাদেশের রেগুলেটরি পরিস্থিতি নতুন করে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের জন্যে দুশ্চিন্তার কারণ। এ অবস্থায় থ্রি জি’র ওপর বিনিয়োগ করা যাবে কিনা সেটি কয়েকটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে।
গ্রামীনফোন ব্যাংক কমিশনের রিপোর্ট সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা সরকারকে তাদের কথা জানিয়েছেন। এখন সরকারকেই বাকি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে গোটা টেলিকম খাতের কথা চিন্তা করে সেক্টরের সকলের জন্যে এমন বিষয়গুলোয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, রকারের পদস্থ ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনাকালে তিনি জানান, ভ্যাট সমস্যার সমাধান না হলে তারা থ্রি জিতে অংশ নাও নিতে পারেন। বরং এগুলোর সমাধান না হলে তাদের পক্ষে পরবর্তী বিনিয়োগে যাওয়া কস্টকর হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, গ্রামীণফোন থ্রি জি’র বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দিচ্ছে না। এটি তাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলেও পরিস্কার জানান তিনি।

Post a Comment